কতদিন ? কতদিন সুখ থাকে বলো ? কতদিন হতে লাগে চোখ টলোমলো ?
(Anik khan- ATN NEWS - Host / Researcher; TOBUO a midmonthly household supplement - Head of Content & Planning; UNMAD - Executive Editor)
ভ্রু কুঁচকায়, মায়াবতীরে খালি দেখবার মনচায় (Xian AR – Associate Group owner, Head of Content, Writer & Planning - mad & p0et )
আমি যখন দাঁড়িয়ে থাকি তোমার রিক্সার পাশে তুমি তখন বসে থাকো অন্য কারও পাশে। (mad & p0et)
এভাবেই শুরু করলাম, আর এগুলোকেই চিরকুট বলে । এক অসাধারণ মজা আর দুষ্টামির ভাবনা আছে চিরকুটে। চিরকুট কিন্তু বেশি সংখ্যক লাইন দিয়ে সৃষ্টি হয়না, দুই না হয় তিন ছাড়িয়ে চার লাইনে যেয়েই উপসংহার চলে আসে। এই সামান্য কয়েক লাইনে সূচনা থেকে উপসংহারে কিছু শব্দ আর কিছু জাদুর ছন্দ জড়িয়ে থাকে, আর দুষ্টামির ভাবনাগুলো নাই বা বলি । চিরকুটের মধ্যে কি রয়েছে, সামান্য কয়েক লাইন, কিছু শব্দ, কিছুটা জাদুর ছন্দ, আর থাকে এক অসাধারণ ভাব, চিরকুট প্রকাশ করে এক অসাধারণ ভাব। শুধু ভাবনা থেকেই যে ভাব প্রকাশ হয়না তার একটি উদাহরণ হলো চিরকুট । এই প্রসঙ্গে পড়ে আসি, তার আগে চলুন দু’একটি চিরকুটের ভাব প্রকাশ করি । অনিক খানের চিরকুটের কথা গুলো ধরুন –
কতদিন ? কতদিন সুখ থাকে বলো ? কতদিন হতে লাগে চোখ টলোমলো ?
জানি ভাবছেন এই কয়েক লাইনে ভাব কোথায়, আর তা প্রকাশই বা হল কোথায়, এখানে তো শুধু একটু দুষ্টামিই আছে। দুষ্টামি আছে স্বীকার করছি, ভাব বা ভাবনা যে আছে এবার সেটা বলছি – বর্তমান সমাজের প্রক্ষাপটে ভাবের কথা একটু ভাবুন, আজ যার মুখে থাকে হাসি, নতুন সকালের আগমোনে তার মুখের হাসিই হয়ে যায় বাসি। কারন বর্তমান সমাজ বলে কথা এখানে সবই হয়,জানি ভাবচ্ছেন একদিনেই কিভাবে মুখের হাসি বাসি হয়ে যায়, আরে ভাই একদিন কেন মাত্ত কয়েক ঘণ্টা সময়ের ব্যবধানে মুখের হাসি বাসি হয়ে যায়, যায় যায়। তাহলে, ধরুন আগামিকাল আপনার বিয়ে কি আনন্দ আপনার চোখে মুখে যেন আনন্দ বেয়ে বেয়ে পড়ছে, আর শরীরের কথা বাদ দিলাম ওটা আরেক দিন বলবো । আপনে বিয়ে করতে গেছেন বিয়ে হয়ে গেছে বাড়ি ফিরবেন এই সময় যদি আপনি বিয়ে হয়ে যাবার পড়েও যৌতুক এর জন্য আপনি বর তালাক প্রাপ্ত হোন তখন কি আপনার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবিবাহিত বন্ধু মনে মনে কি বলবে না, একটু কি ভাববেনা –
কতদিন ? কতদিন সুখ থাকে বলো ? কতদিন হতে লাগে চোখ টলোমলো ?
তারপর ধরুন – উরু চুলকায়, ভ্রু কুঁচকায়, মায়াবতীরে খালি দেখবার মনচায়।
বর্তমান সমাজের সামাজিক অবস্থার কথা একটু ভাবুন, আপনি যদি ঘর থেকে বের হন আর যদি east west or north south or brac university অথবা বসুন্ধরা সিটিতে আসেন বা যদি আপনে এর সামনে দিয়ে যান তখন আমাদের এই চিরকুট আপনার জীবনে বার বার উচ্চারিত হবে।
আর জানেন তো – আনন্দ বা তৃপ্তিকর কিছু চোখে পড়লে আমাদের চোখের মণি ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রসারিত হয়। {সূত্র – ছুটির দিন – প্রথম আলো}
দেখলেন তো দুষ্টামি থাকুক আর কয়েক লাইন থাকুক চিরকুট কিন্তু এক অসাধারন ভাব প্রকাশ করে। এবার ভাব থেকে অন্য ভাবে আসি, অন্য আলোচনায় আসি, কিন্তু মনে রাখবেন প্রসঙ্গ কিন্তু চিরকুট।
একটি মজার বিষয় আছে, সেটি কি জানেন সেটি হল - এই যে চিরকুট, এই চিরকুট নিয়ে আমি বা আমরা সবাই নিজের জ্ঞানে হোক আর নিজের অজান্তে হোক এই চিরকুট নিয়ে আমাদের সবারই কিন্তু ভাবা হয়েছে, কারও হয়ত ভাবা হয়েছে কিন্তু লেখা হয়ে উঠেনি, কারও বা লেখা হয়েছে কিন্তু আজও প্রিয় মানুষটিকে দেয়া হয়নি । জানি এখন নিশ্চয়ই ভাবচ্ছেন, যে এই চিরকুট নাকি আপনি ভেবেছেন আবার লেখা হয়নি আবার লেখা হয়েছে কাউকে দেয়া হয়নি, এ আবার কেমন কথা ! এ জন্যই বলছি, কারন বা যুক্তি আমাদের (mad & p0et) কিন্তু আপনি নিজেও ভাবতে পারেন বা আপনি নিজেও এর বিরোধিতা করতে পারেন। আমরা আগেই বলেছি - শুধু ভাবনা থেকেই যে ভাব প্রকাশ হয়না তার একটি উদাহরণ হল চিরকুট। আমাদের ভাবনা বা এর পক্ষে কথাগুলো হল এরকম – চিরকুটকে আমরা সাহিত্য বা লেখালেখির কোন অবিচ্ছেদ্য অংশ বলি না, আমরা চিরকুটকে জীবনেরই একটি অংশ বলি, জীবনের প্রতিফলন চিরকুটে আছে।
চিরকুট total part of life; it’s not art of literature.
দেখুন কবিতা, ছোট গল্প, প্রবন্ধ, আর উপ্যনাস এর মতো চিরকুট কিন্তু আপনি কাগজ, কলম নিয়ে বসে বসে ভাববেন, চিন্তা করবেন তার পর আপনে তা লিখবেন, এমনটি কিন্তু চিরকুটের ক্ষেত্রে হয়না । আসলে এই চিরকুট হলো – চোখের কিছু সামান্য দর্শন আর তাৎক্ষণিক অনুভূতির লিখিত রুপই হলো চিরকুট। আর এ জন্যই আমরা বলেছি, শুধু ভাবনা থেকেই যে ভাব প্রকাশ হয়না তার একটি উদাহরণ হল চিরকুট।
যেমন ধরুন হটাৎ একদিন আমার প্রিয়তমা সুভাষিণীকে দেখলাম ফেসবুকে profile picture এ অন্য কারও বুকে মাথা দিয়ে বসে আছে। আর তা দেখে স্বাভাবিকভাবেই আমি একটু কষ্ট পেলাম আর আর সাথে সাথেই ভেবে ফেললাম আর লিখে ফেললাম – একদিন ছিলে আমার বুকে আজ দেখি অন্যের বুকে তাও আবার ফেসবুকে ভালো ভালো খুব ভালো আজ কেন দিনগুলো এতো কালো । দেখলেনতো - চোখের কিছু সামান্য দর্শন আর তাৎক্ষণিক অনুভূতির লিখিত রুপই হলো চিরকুট।
অস্বীকার করিনা যে সাহিত্যে জীবনের প্রতিফলন ঘটেনা। সাহিত্যে অবশ্যই জীবনের প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু আমরা চিরকুটকে সাহিত্য বা লেখালেখির কোন অংশ বলি না আর শুধু ভাবনা থেকেই যে ভাব প্রকাশ হয়না আর ভাবনা ছাড়াও যে তাৎক্ষণিক অনুভূতি দ্বারা লিখা যায় আর সে লেখাও যে এক অসাধারন ভাব প্রকাশ করে আমারা তাই বলতে চেয়েছি তাই বুঝাতে চেয়েছি।
|
||